
রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫
ফারাক্কা, মালদা:
দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত মহাদেবনগর পঞ্চায়েতের তারাপুর গ্রামের রাস্তা নিয়ে এবার ধৈর্য্যের সীমা ছাড়িয়েছে এলাকাবাসী। ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে একেবারে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকা রাস্তা বর্ষা এলেই পরিণত হয় এক হাঁটু কাদা-জলে ভর্তি পথে। প্রতিবার ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি মিললেও, কাজের কাজ কিছুই হয়নি—এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বর্ষায় তো দূরের কথা, শুষ্ক মৌসুমেও স্বাভাবিক চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। রাস্তার দক্ষিণ প্রান্তে থাকা কবরস্থানে জানাজা নিয়ে যাওয়াও দুঃসাধ্য। বাইক, সাইকেল বা পায়ে হেঁটে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের মহিলা ও বৃদ্ধরাও প্রতিনিয়ত পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন।
একটাই স্লোগান—”রাস্তা না হলে ভোট নয়”
গ্রামবাসীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “বছরের পর বছর ধরে শুধু প্রতিশ্রুতি শুনে আসছি। কাজের নামগন্ধ নেই। এবার পাকা রাস্তা না হলে ভোট দেব না।” রাস্তা না হওয়া পর্যন্ত তারা ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, প্রশ্নের মুখে ‘ফারাক্কা মডেল’
গ্রামবাসীদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থানীয় বিধায়ক। তারা বলছেন, “নেতারা ভোটের সময় এলেই ছবি তোলে, প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু তারপর আর তাদের দেখা মেলে না।”
এই পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে কংগ্রেসের রাজ্য যুব সহ-সভাপতি আশিক ইকবালও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ফারাক্কা মডেল দেখতে এসেছিলাম, কিন্তু বাস্তবে যা দেখছি তা উন্নয়নের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই নয়।” তিনি অর্জুনপুর, ঘোড়াইপাড়াসহ অন্যান্য এলাকার রাস্তাও করুণ অবস্থায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য পরিষেবার অবস্থাও সমান উদ্বেগজনক বলে দাবি তাঁর। “তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকার পরও দিনের পর দিন বিদ্যুৎ থাকছে না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও অপ্রতুল। এটাই কি মডেল উন্নয়ন?”
মহাদেবনগর পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে আপাতত সামান্য মাটি ও ডাস্ট ফেলা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বিধায়ককে জানানো হয়েছে এবং ভোটের আগেই কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন।
তবে গ্রামবাসীরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন—”আশ্বাস নয়, এবার চাই কাজের ফল। এবার আর ধোঁকা নয়।”