
কান্দি, মুর্শিদাবাদ, ২৬/০৬/২০২৫
রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত রথযাত্রা উৎসব, আর তারই প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছে মুর্শিদাবাদের কান্দি শহর। জোর কদমে চলছে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা ও পূজার প্রস্তুতি। কান্দির লালাবাবুর প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক রথ এবার পেরোলো ২০০ বছরের গণ্ডি।
কান্দি শহরের রাধাবল্লভ জিউর মন্দির থেকে বের হয় এই রথযাত্রা। জানা যায়, প্রায় দু’শো বছর আগে লালাবাবু ওরফে কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ পুরীধামের রথদর্শন করে এসে নিজ শহরে রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেন। সেই থেকেই কান্দির এই রথযাত্রা এক ঐতিহ্যবাহী উৎসবে পরিণত হয়েছে।
ইতিমধ্যেই শহরের মন্দির প্রাঙ্গণ ও রথ ঘাট সেজে উঠেছে উৎসবের রঙে। তিন রঙে রঙিন লোহার কাঠামোর এই রথে অধিষ্ঠিত থাকেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। শুক্রবার বিকেল ৪:৩০-এ রথ বের হবে মন্দির থেকে এবং গোটা কান্দি শহর পরিক্রমা করে পুনরায় মন্দিরেই ফিরে আসবে।
পুরানে বর্ণিত ‘মাসির বাড়ি’-র প্রতীকী রীতি আগে পালন হলেও, বর্তমানে সেই স্থান ভগ্নদশায় পরিণত হওয়ায় দেবতাদের আবার মন্দিরেই স্থাপন করা হয়। পরবর্তী আট দিন ধরে চলে বিশেষ পূজো ও ভোগ নিবেদন।
রথ উপলক্ষে বসেছে মেলা, যেখানে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন দূরদূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীরা। কান্দির রথযাত্রা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি এক ঐতিহ্যবাহী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “এই রথ আমাদের গর্ব, আমাদের সংস্কৃতির প্রতীক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আমরা এই রীতি পালন করে আসছি।”
এই বছরের রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর আবহ, যা প্রতিফলিত হচ্ছে মানুষের মুখে মুখে, আলোয় সেজে ওঠা রথে আর কীর্তনের সুরে।