


মুর্শিদাবাদ, মঙ্গলবার, ২৪/০৬/০/২০২৫
ঐতিহাসিক প্রাচীন পিতল, রৌপের রথ এবার পরিক্রমা করবে মুর্শিদাবাদ শহরের মধ্যে দিয়েই। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিল মুর্শিদাবাদ পৌরসভা। ২৫০ বছরের প্রাচীন মুর্শিদাবাদের এই রথ।তবে এতদিন নশিপুরে পরিক্রমা করতো।এবছর প্রথম মুর্শিদাবাদ শহরে পরিক্রমা করবে বলেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের নশিপুর আখড়ার মোট পাঁচটি রথ পরিক্রমা করে। দুটো কাঠের, দুটো পিতলের ও একটি রুপোর রথ পরিক্রমা করে। ২৫৫ বছরের প্রাচীন নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের লালবাগের নশিপুর আখড়ার রথ। তবে এবার পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই একটি রৌপো, একটি পিতলের রথ পরিক্রমা করবে। পর্যটকদের কাছে এই রথযাত্রার মূল আকর্ষন রুপোর রথ। নবাবি আমলে হাতির পিঠে রুপোর রথে করে জগন্নাথদেব যেতেন মাসির বাড়ি অর্থাৎ জগৎ শেঠের বাড়ি। সে সবই আজ ইতিহাস। ১১৬৮ বঙ্গাব্দে স্বামী রামানুজের শিষ্য লছমন দাস ও মনসরাম দাস ধর্ম প্রচারের জন্য মুর্শিদাবাদে এসে নশিপুরে এক আখড়া স্থাপন করেন এবং পরবর্তীতে রথযাত্রার সূচনা করে। সেই প্রথা মেনে আজও আয়োজিত হচ্ছে প্রায় ২৫৫ বছরের প্রাচীন নশিপুর আখড়ার রথযাত্রা।
নসিপুর আখড়ার রুপোর রথে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে দেখতে জেলা এবং জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর মানুষ ভিড় জমান নসিপুরে। রথের দিন বিকেলে সোনার জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রুপোর রথে চেপে পথে নামেন। পথে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে সন্ধ্যার আগেই আখড়ায় ফিরে আসেন। রথযাত্রা ঘিরে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়। যদিও এবছর মুর্শিদাবাদ পৌরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহর জুড়ে সকাল দশটা নাগাদ দুটি রথ বের হবে। সারাদিন ঘুরে বিকালে গিয়ে আখড়ার সামনে পৌঁছাবে। তারপর হবে মূল অনুষ্ঠান।
কথিত আছে, জাফরাগঞ্জ আখড়ার রথযাত্রা উৎসবে রুপোর রথ দেখতে তৎকালীন সময়ে নবাব ও স্থানীয় জমিদারদের আত্মীয় ও অতিথিরা আসতেন বলে শোনা যায়। আখড়ার রথযাত্রা উৎসব ঘিরে সাতদিন ধরে নসিপুরে গ্রামীণ মেলা বসত। পরবর্তী সময়ে গঙ্গা ভাঙ্গনে নদী গর্ভে জগৎ শেঠের পুরনো বাড়িটি চলে গেলেও প্রাচীন প্রথা মেনে আজও প্রতিবছর রথ ও উল্টোরথের দু’দিন রুপোর রথ সহ জাফরাগঞ্জ আখড়ার পাঁচটি রথ জগৎ শেঠের পুরনো বাড়ির সামনে একটি মাঠে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ায় এবং সন্ধ্যার আগেই আখড়ায় ফিরে আসে। এখন রথযাত্রা উপলক্ষে সাতদিন ধরে গ্রামীণ মেলা না বসলেও রথ ও উল্টোরথের দু’দিন মেলা বসে।