
বাঁকুড়া, শনিবার, ২১/০৬/২০২৫ :-
টানা দু’দিন ধরে আর্সেনিকমুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল না পাওয়ায় কার্যত ‘নির্জলা’ অবস্থা বাঁকুড়া শহরে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও বড়জোড়া জল প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রবল ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শহরবাসীর মধ্যে। জল সংকটের জেরে অসহায় অবস্থা সাধারণ মানুষের, ক্ষোভে ফুঁসছে বাঁকুড়া পুরসভাও।
পুরসভার চেয়ারপার্সন অলকা সেনমজুমদার নিজেই জানিয়েছেন, তিনি দু’দিন ধরে জল না পেয়ে হাপিত্যেশ করছেন। বৃহস্পতিবার পিএইচই দপ্তর জল সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করলেও শুক্রবার তারা স্বীকার করে নেয়, প্রকৃতপক্ষে পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে।
পিএইচই দপ্তরের এক সহকারী প্রকৌশলী জানান, “নিম্নচাপের ফলে ভারী বৃষ্টিতে বড়জোড়া ব্যারাজে জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যায়। সেই কারণে ইনটেক পয়েন্টে প্রচুর কচুরিপানা জমে যায়। জল উত্তোলনে সমস্যা হচ্ছে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, শনিবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
বাঁকুড়া শহরের ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক ও আয়রনসহ ক্ষতিকর মৌল থাকার কারণে বড়জোড়া প্রকল্প থেকেই শহরে আর্সেনিকমুক্ত পরিস্রুত জল সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন গড়ে দেড় কোটি লিটার জল শহরে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু গত দু’দিন ধরে সেই পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। ফলে হাজার হাজার মানুষ জলকষ্টে ভুগছেন।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনের নজর গিয়ে পড়ে বিষয়টির উপর। বাঁকুড়া সদর মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। বড়জোড়া প্রকল্প এলাকাতেও সরেজমিন তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত বছর পুজোর আগে একই রকম পরিস্থিতিতে ডুবুরি আনিয়ে কচুরিপানা পরিষ্কার করে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছিল। এবার পরিস্থিতি অতটা মারাত্মক না হলেও, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, প্রশাসনিক ও কারিগরি সমন্বয়ের অভাবে বারবার এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় পিএইচই-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। শহরবাসীর প্রশ্ন, কেন বারবার একই সমস্যায় ভুগতে হবে সাধারণ মানুষকে? দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সরব হয়েছেন শহরের নাগরিক সমাজ।