
বাঁকুড়া, শনিবার, ২৮/০৬/২০২৫
পরপর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় বাঁকুড়া জেলা পুলিস এবার সতর্ক। বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে দুর্ঘটনা রুখতে এক অভিনব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—রাস্তার পাশে থাকা গাছে রিফ্লেক্টর লাগানো শুরু হয়েছে জেলার বিভিন্ন জায়গায়।
বাঁকুড়া জেলা পুলিস সূত্রে খবর, রাজ্য ও জাতীয় সড়কে রাস্তার বাঁক বা আলোবিহীন এলাকা চিহ্নিত করে সেইসব স্থানে গাছে লাল, হলুদ, সাদা ও কমলা রঙের ফিতে জাতীয় রিফ্লেক্টর লাগানো হচ্ছে। লক্ষ্য, রাতের অন্ধকারে চালকদের দৃষ্টিগোচরে আনতে রাস্তার সীমানা ও বাঁকের হুঁশিয়ারি।
জেলার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে ২০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। এর মধ্যে অধিকাংশই বাইক আরোহী। বিশেষ করে বিনা হেলমেটে বাইক চালানোয় মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। পুলিসের মতে, হেলমেট থাকলে অনেক প্রাণ বাঁচানো সম্ভব—তা বিভিন্ন উদাহরণেই প্রমাণিত।
এই কারণেই রাজ্য ও জাতীয় সড়কে নিয়মিত নাকা চেকিং চালাচ্ছে পুলিস। শুধু বাইক চালকদের হেলমেটই নয়, চারচাকা গাড়িতে চালক ও সামনের যাত্রীদের সিট বেল্ট পরা বাধ্যতামূলক করার ওপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম লঙ্ঘন করলে জরিমানার বিধানও কার্যকর হচ্ছে।
পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে কোনও এলাকায় দুই বা ততোধিক মৃত্যুর দুর্ঘটনা ঘটলেই সেখানে ডিএসপি বা অ্যাডিশনাল এসপি-র নেতৃত্বে তদন্ত টিম পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা বিপজ্জনক বাঁক, আলো না থাকা, রাস্তাঘাটের অবস্থা ইত্যাদি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিচ্ছেন।
রাতের অন্ধকারে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে। বিশেষ করে রাস্তার বাঁকের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক বা ছোট গাড়ি গাছে ধাক্কায় চূড়ান্ত দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিস আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যানবাহনের হেডলাইট পড়লেই রিফ্লেক্টর জ্বলজ্বল করবে, ফলে চালক বাঁক বা রাস্তার শেষ সীমা বুঝতে পারবেন এবং সময়মতো গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন।
বাঁকুড়া জেলা পুলিস আগেই ঠিক করেছিল ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অন্তত ২০ শতাংশ কমানো হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি সেই লক্ষ্যে ধাক্কা দিয়েছে। তাই আরও সক্রিয়ভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে জেলার দুর্ঘটনার হার কিছুটা হলেও কমবে বলেই আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা ও স্থানীয় বাসিন্দারা।