Site icon বাংলা খবর

ঘুমন্ত অবস্থায় সাপের কামড়ে মৃত্যু যুবকের, শোকস্তব্ধ জিয়াগঞ্জের সাধকবাগ

IMG-20250625-WA0058

প্রশান্ত সাহা, ২৫ জুন, ২০২৫. জিয়াগঞ্জ

মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থানার অন্তর্গত সাধকবাগ গ্রামে সাপের কামড়ে মৃত্যু হল এক ২৬ বছরের যুবকের। মৃত যুবকের নাম বকুল হালদার ওরফে মাধব, পেশায় একজন রাজমিস্ত্রির যোগানদার। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতেও খাওয়া-দাওয়া সেরে নিজের ঘরে মশারির ভেতর শুয়ে পড়েছিলেন বকুল। কিন্তু গভীর রাতে আচমকাই এক বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, গভীর রাতে ঘুমের মধ্যেই হঠাৎ কিছু একটা বকুলের হাতে কামড় দেয়। প্রচণ্ড জ্বালা ও যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে তিনি ছটফট করতে থাকেন ও কাঁদতে শুরু করেন। পাশের ঘরে থাকা তাঁর ছোট ভাই যাদব হালদার প্রথমে ভেবেছিলেন বাবা হয়তো শরীরের ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। কিন্তু কান্নার তীব্রতা বাড়তে থাকলে তিনি ঘরে এসে দেখতে পান দাদা বিছানায় বসে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।
পরিবারের সদস্যরা প্রথমে বিষয়টিকে ইঁদুর বা বিছের কামড় বলে মনে করলেও, বকুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে তৎক্ষণাৎ বিছানা থেকে নামিয়ে মশারি খুলে আলো দিয়ে ঘর খোঁজাখুঁজি শুরু করা হয়। তখনই দেখা যায়, মাথার বালিশের ঠিক পাশ দিয়ে একটি বিষধর খৈয়া গোখরো (Spectacled Cobra) সাপ বিছানা থেকে নেমে যাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে জিয়াগঞ্জ সদর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় বকুল হালদারের।
ঘটনার খবর পেয়ে বনদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে, একটি উদ্ধারকারী দল এসে সেই বিষধর সাপটিকে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশ ও বনদপ্তরের যৌথ তৎপরতায় সাপটিকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বকুল হালদারের দেহকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মুর্শিদাবাদ সদর হাসপাতালে।
এই আকস্মিক ও মর্মান্তিক ঘটনার পর গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মাত্র ২৬ বছর বয়সে প্রাণ হারানো বকুলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সকলেই শোকাহত। একমাত্র রোজগেরে ছেলের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মা ও ভাইয়ের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে রইল।
স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন, বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব রোধে আরও সচেতনতা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পাশাপাশি, গ্রামীণ এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম রাখার ব্যবস্থাও জরুরি বলে মনে করছেন অনেকে।

Exit mobile version