কলকাতা, বুধবার, ২৫/০৬/২০২৫
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে স্কুলপড়ুয়া শিশুদের ‘মজার’ অজুহাতের ভিডিও। কোথাও হোমওয়ার্কের খাতায় ছাগল প্রস্রাব করেছে বলে এক ছাত্র ক্লাসে খাতা না আনার যুক্তি দিচ্ছে, আবার কোথাও এক খুদে ছাত্রী দাবি করছে, তার মা নাকি বলেছে স্কুলে কিছুক্ষণ থেকে বেরিয়ে আসা যাবে!
এইসব ঘটনা শুনে যেমন শিক্ষক ও সহপাঠীরা হেসে কুটোপাটি হয়েছেন, তেমনই ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করায় তা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যজুড়ে। ঘটনাগুলি যথাক্রমে খানাকুল এবং জঙ্গলমহল এলাকার দুটি স্কুলে ঘটেছে।
তবে, এই আপাত ‘মজার’ ভিডিও নিয়েই এবার উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন। রাজ্যের শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ও শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন কড়া অবস্থান নিয়েছে।
রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস জানিয়েছেন, “এই ধরনের ভিডিও আপলোড একেবারেই করা যায় না। খানাকুলের ঘটনায় আমরা ভিডিওটি মুছে দিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে শোকজ করেছি।”
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, “এই ধরনের ভিডিও তো আপলোড করাই অনুচিত, এমনকি তা রেকর্ডও করা যায় না। আমরা রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। প্রয়োজনে শিক্ষকদের জবাবদিহি করতে হবে।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “গতবছরই এ বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ক্লাসরুমে ছাত্রছাত্রীদের রিলস বা ভিডিও তৈরির প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ভিডিও পরবর্তীকালে ওই পড়ুয়াদের জন্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, এগুলি একবার ছড়িয়ে গেলে মুছে ফেলা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই আইনত না হলেও, নৈতিক দিক থেকে শিক্ষকদের আরও সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অভিভাবকদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষকেরা যে ভাবে ছাত্রছাত্রীদের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিচ্ছেন, তা নিয়ে রাজ্য সরকার এবং শিক্ষা দপ্তর কড়া অবস্থান নিচ্ছে বলে সূত্রের খবর।