
কলকাতা, শনিবার, ২৮/০৬/২০২৫
কলকাতার সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের মধ্যেই গার্ড রুমে গণধর্ষণের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রে কলেজের প্রাক্তন দুই ছাত্র ও এক বর্তমান কর্মী। ঘটনার পর মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই কসবা থানার পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনায় চরম শোরগোল পড়েছে শিক্ষাঙ্গনে।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে পরীক্ষা ফর্ম ফিলআপ করতে কলেজে এসেছিলেন নির্যাতিতা। কাজ মিটিয়ে তিনি ইউনিয়ন রুমে অপেক্ষা করছিলেন। তখনই কলেজের তৃণমূল ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ও চুক্তিভিত্তিক কর্মী মনোজিৎ মিশ্র তাঁকে ডাকেন এবং কিছুক্ষণ থাকতে বলেন। সন্ধ্যায় মনোজিৎ, প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং জায়িব আহমেদ মিলে গেট বন্ধ করে নির্যাতিতাকে গার্ড রুমে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ছাত্রী জানিয়েছেন, তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং রাজি না হওয়াতেই এই নৃশংসতা। অভিযুক্তরা তাঁর নগ্ন ভিডিও তোলে, হকি স্টিক দিয়ে মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।
বৃহস্পতিবার নির্যাতিতার লিখিত অভিযোগের পর রাতেই মনোজিৎ ও জায়িবকে তালবাগান এলাকা থেকে এবং শুক্রবার সকালে হাওড়া থেকে প্রমিতকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্যাতিতার পোশাক ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন এবং গলায় কামড়ের দাগ মিলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জাতীয় মহিলা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে দ্রুত ও কার্যকরী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
ঘটনাটি শুধু শিক্ষাঙ্গন নয়, গোটা রাজ্যকে স্তব্ধ করেছে। উঠছে প্রশ্ন—আইনের পাঠশালাতেই ছাত্রীর নিরাপত্তা কোথায়?