পুরী, উড়িষ্যা, বুধবার, ২৫/০৬/২০২৫
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রার ঠিক আগে চুরি সংক্রান্ত এক অভূতপূর্ব বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। মন্দিরের দুই বিশিষ্ট সেবায়েতের দাবি অনুযায়ী, দেবতাদের জন্য সংরক্ষিত ঐতিহ্যবাহী আয়ুর্বেদিক ওষুধ ‘দশমূল মোদক’-এর একটি বড় অংশ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছে।
সেবায়েতদের অভিযোগ, শনিবার রাতে মন্দিরের গারদাঘরে রাখা ৩১৩টি মোদকের মধ্যে ৭০টি ওষুধ অদৃশ্য হয়ে গেছে। এই অভিযোগ লিখিতভাবে পাঠানো হয়েছে শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন (SJTA)-এর কাছে।
বড়গ্রাহী হালধরা দাশমোহাপাত্র, যিনি জগন্নাথ এবং বালভদ্রের চিকিৎসা দেখাশোনা করেন, বলেন—“এই ধরনের ঘটনা অতীতে কখনও ঘটেনি। গারদাঘরে ওষুধ সবসময় নিরাপত্তার মধ্যে থাকে। তবু ৭০টি মোদক কীভাবে উধাও হয়ে গেল, তা ভেবে পাচ্ছি না।” তাঁর দাবি, ঘটনাটি নিতান্তই গাফিলতি বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চুরির ইঙ্গিত দিচ্ছে। SJTA-র মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিকও জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে চুরির কোনও প্রমাণ মেলেনি, তবে অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
‘দশমূল মোদক’ মূলত একটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ, যা রথযাত্রার আগে দেবতাদের ‘অনাসর’ পর্যায়ে চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই পর্যায়ে দেবতারা বিশ্রামে থাকেন এবং দর্শনার্থীদের কাছে প্রকাশ্যে আসেন না।
এই ঘটনা ঘিরে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এখনই নিশ্চিতভাবে ‘চুরি’ বলা যাচ্ছে না, সেবায়েত ও প্রশাসনের বক্তব্যে স্পষ্ট দ্বৈততা রয়েছে। SJTA-র তদন্তই ঠিক করবে ঘটনাটি কেবল হিসাবের গড়মিল, না কি এর পেছনে কোনও গোপন চক্রান্ত লুকিয়ে রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং স্বচ্ছতা বজায় রেখে ধর্মীয় আস্থার প্রতীক এই ঐতিহাসিক মন্দিরে ভক্তদের বিশ্বাস অটুট রাখাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।