লালগোলা, শুক্রবার, ২০/০৬/২০২৫ :-
বাবা ছিলেন এক সময়ের ফুটবলপ্রেমী—খেলতেন দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাবে। কিন্তু চোটের কারণে থমকে গিয়েছিল তাঁর স্বপ্নপথ। আজ সেই অপূর্ণ স্বপ্নকেই বাস্তব রূপ দিলেন তাঁর ছোট ছেলে সাজিদ মেহমুদ মীরন। মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার প্রত্যন্ত ময়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাইতনি এলাকার এই তরুণ এখন কলকাতার প্রথম সারির ক্লাব, মহামেডান স্পোর্টিং-এ জায়গা করে নিয়েছেন সিনিয়র ডিভিশনে।
সাজিদের বাবা, মহিউদ্দিন শেখ, পেশায় একজন কোয়াক ডাক্তার হলেও মনপ্রাণ উজাড় করে দিয়েছেন ফুটবলেই। নিজের খেলোয়াড় জীবনে চোটের কারণে সিনিয়র স্তরে পৌঁছাতে না পারলেও ফুটবল ছাড়েননি তিনি। এলাকার ছেলেমেয়েদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন অনুশীলনের পরিকাঠামো। ছেলেদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন নিজেই।
সাজিদ জানাচ্ছেন, ছোটবেলা থেকেই বাবার কোচিং আর নিজের কঠোর পরিশ্রমই ছিল তাঁর সঙ্গী। ভোর ৩টেয় উঠে লালগোলায় পৌঁছনো, সেখানে প্র্যাকটিস করে ট্রেনে কলকাতায় খেলা—এই ছিল তাঁর নিত্যদিনের রুটিন। আজ সেই সমস্ত কষ্ট সফল হয়েছে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মনোনয়নের মাধ্যমে।
তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাজিদের লক্ষ্য এখন আরও বড়। কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ডা কাপে নিজের জায়গা পাকা করে, এবার তাঁর লক্ষ্য সিনিয়র আইএফএ লিগ ও দেশের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন পূরণ। ছেলের এই সাফল্যে চোখে জল বাবার, মহিউদ্দিন শেখ বলেন, “আমি জানতাম, একদিন ও বড় ক্লাবে খেলবেই। আমি শুধু ওকে পথ দেখিয়েছি।”
গ্রামের মানুষের কাছেও সাজিদ এখন গর্বের প্রতীক। তাঁর সাফল্যে উৎসবের আবহ ছড়িয়ে পড়েছে ছাইতন গ্রামে। প্রমাণ হল—স্বপ্ন দেখার সাহস আর কঠোর পরিশ্রম থাকলে ছাইতনের মতো গ্রামের ছেলেও পৌঁছে যেতে পারে কলকাতার আলোঝলমলে ময়দানে।