Site icon বাংলা খবর

ছাতা মাথায় ক্লাস! হুগলির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিডিও ঘিরে তীব্র বিতর্ক, প্রশ্নের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষ

WhatsApp Image 2025-06-21 at 11.57.35_bc7db096

হুগলি, শনিবার, ২১/০৬/২০২৫ :-

ক্লাসরুমে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক ছাতা মাথায় পড়াশোনা করছেন—সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলির পাণ্ডুয়ার পাঁচপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ঘিরে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা ‘বর্তমান’ যাচাই করেনি, তবে তা ঘিরে প্রশাসনিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এবং প্রশ্ন উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে।

জানা গিয়েছে, বিদ্যালয়টি একটি দোতলা পাকা ভবনে অবস্থিত। তবে ভিডিওটি বিদ্যালয়ের পুরোনো অংশের, যার ছাদ টিনের এবং বহু জায়গায় মরচে পড়ে ফুটো হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির জলে ছাদ চুঁইয়ে পড়ায় ক্লাস চালাতে বাধ্য হয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা ছাতা ব্যবহার করছেন বলে দাবি স্কুলের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত গুপ্ত জানিয়েছেন, “আমার পাকাপোক্ত চারটি ক্লাসরুম থাকলেও প্রি-প্রাইমারি ও প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াদের বসানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই পুরোনো ভবনে ক্লাস নিতে হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ভবন সংস্কারের জন্য অনেকবার আবেদন করা হয়েছে, তবে বিলম্বে সরকারি অনুমোদন এসেছে।

জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২৪ সালে আবেদন পাওয়ার পরেই সরেজমিনে পরিদর্শন হয় এবং ভবন সংস্কারের জন্য প্রায় ১১ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এই অর্থ সদ্য জেলা তহবিলে এসে পৌঁছেছে বলেও জানা গিয়েছে।

তবে তাতে প্রশাসনের অসন্তোষ মেটেনি। জেলা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় কড়া ভাষায় বলেন, “ছবি বা প্রচারের জন্য ছাত্রদের বিপদের মুখে ফেলা গুরুতর অপরাধ। ত্রিপল তো চাইলেই পঞ্চায়েত থেকে পাওয়া যেত। আমরা ওই ভবনকে ইতিমধ্যেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে।”

এদিকে, শিক্ষাকর্তাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, কেন ভবনের বারান্দা ব্যবহার করা হয়নি, কেন ত্রিপল ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, কিংবা অতিরিক্ত ক্লাসরুমের আবেদনও কেন করা হয়নি—এসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি বিদ্যালয়।

ছোট ছোট শিশুদের এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়াশোনার ঘটনায় একদিকে যেমন শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত দুর্বলতা চোখে পড়ছে, তেমনই দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশাসনের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হলেও, এই ঘটনার রেশ কিছুদিন হয়তো থেকেই যাবে।

Exit mobile version