তমলুক দিঘা ২৫/০৬/২০২৫
এ যেন দীঘার নতুন চেহারা—সাগর, সূর্য আর এবার সঙ্গে জগন্নাথের রথযাত্রা। প্রথমবার দীঘায় আয়োজিত হতে চলেছে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা, আর সেই উপলক্ষে শহর এখন রঙিন আলো ও কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া।
শুক্রবার, ২৭ জুন, দীঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে প্রথম রথযাত্রা শুরু হতে চলেছে। তার আগেই শহরে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বুধবার, মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে দীঘা-সহ গোটা রুট জুড়ে নিরাপত্তার চাদর আরও মজবুত করা হয়েছে। কোলাঘাট থেকে দীঘা পর্যন্ত জাতীয় সড়কের দু’ধারে রাজ্য পর্যটন ও তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে লাগানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও জগন্নাথ দেবের ছবি-সহ হোর্ডিং।
দীঘা রথযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে ১০টি সহায়ক বুথ। মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার নিরাপত্তাকর্মী। মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে বাহিনী এসে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্য পুলিশের এডিজি বিনীত গোয়েল ইতিমধ্যেই দীঘায় এসেছেন।
রথযাত্রার মূল পথ—মন্দির থেকে মাসির বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার—জুড়ে সাজানো হয়েছে আলোর কারুকাজে। বসানো হয়েছে মাইক, বাঁধা হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড ও ড্রপ গেট। ভিড় নিয়ন্ত্রণে এবং নিরাপত্তায় অংশ নিয়েছেন ২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট, যাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চারজন অতিরিক্ত জেলাশাসক। প্রতিটি বিষয়ে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে দায়িত্ব: পুজোর ব্যবস্থাপনা, পার্কিং, ভিআইপি যাতায়াত, হোটেল ও দুর্যোগ মোকাবিলা—সব ক্ষেত্রেই নিখুঁত পরিকল্পনা।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাঁচ মন্ত্রী—পুলক বায়, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য—আজ সকালে কলকাতা থেকে দীঘার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। মন্দির উদ্বোধনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই মন্ত্রীদের উপরই রথযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
রথযাত্রার টানেই বহু ভক্ত ইতিমধ্যেই হোটেল বুক করে ফেলেছেন। তাঁদের যাতায়াতের সুবিধার্থে পাঁশকুড়া-দীঘা রুটে চালু হচ্ছে একটি স্পেশাল ট্রেন, যা চলবে সকাল ৭টায়। রেলের তথ্য অনুযায়ী, এই ট্রেন ঘিরে যাত্রীদের উৎসাহ তুঙ্গে।
২৬ জুন ফের মন্দিরের গর্ভগৃহে দর্শনের সুযোগ থাকবে। ২৭ তারিখ সকাল ৬টা থেকে দরজা খুলবে সকলের জন্য। ‘পাহান্ডি বিজয়’ শেষে শুরু হবে ঐতিহাসিক রথযাত্রা। দীঘা আজ এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে সমুদ্রতটের ঢেউয়ের সঙ্গে মিশছে বিশ্বাস, ভক্তি ও উৎসবের উচ্ছ্বাস।